ঝাড়খণ্ড ও জম্মু-কাশ্মীরে কাল প্রথম দফার ভোট
মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার পর এ বার আরও দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন।
মঙ্গলবার শুরু হবে ঝাড়খণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার পাঁচ দফার নির্বাচন। ভোটপর্ব মিটবে আগামী ২০ ডিসেম্বর। তার তিন দিন পর ভোটগণনা। প্রায় এক মাসের এই নির্বাচন পর্বকে ঘিরে ঝাড়খণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার পর এ বার আরও দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন।
মঙ্গলবার শুরু হবে ঝাড়খণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার পাঁচ দফার নির্বাচন। ভোটপর্ব মিটবে আগামী ২০ ডিসেম্বর। তার তিন দিন পর ভোটগণনা। প্রায় এক মাসের এই নির্বাচন পর্বকে ঘিরে ঝাড়খণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
২০০০-এর ১৫ নভেম্বর বিহার ভেঙে জন্ম নিয়েছিল ঝাড়খণ্ড। জন্মলগ্ন থেকে মাওবাদী প্রভাবিত ছোট এই রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা লেগেই রয়েছে। এর মধ্যে তিন বার রাষ্ট্রপতি শাসন এবং ন’বার সরকার গঠন হয়েছে এই রাজ্যে। তবে আদিবাসী-প্রধান ঝাড়খণ্ডের তখতে কখনও অন্য সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রী বসেননি।
এ বারের পরিস্থিতি কেমন?
সম্প্রতি দুই রাজ্যে সাফল্যের পর বিজেপি এখানেও ‘একলা চলো’ নীতি নিয়েছে। তবে ৮১টি আসনের মধ্যে তারা ৭২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। অন্য ৮টি আসন বিজেপি নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন জোটসঙ্গী ‘অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’কে। আর একটি আসন দেওয়া হয়েছে রামবিলাস পাসোয়ানের ‘লোক জনশক্তি পার্টি’কে। একক ভাবে লড়াই শুধু নয়, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার সাফল্যের পিছনে আরও এক চাবিকাঠি ছিল বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দুই রাজ্যেই সরকার গঠনের আগে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেননি তাঁরা। এ ক্ষেত্রেও একই নীতি নেওয়া হয়েছে। কোনও ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে না ধরে, বিজেপি-র প্রচারে শুধু ‘রাজ্যে মোদী সরকার গঠন’ করার কথই বলা হচ্ছে। এমনকী, সম্প্রতি ডালটনগঞ্জের সভায় মোদী নিজেও বলেছেন, “খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ঝাড়খণ্ডের উন্নয়ন যদি চান তবে আমায় একটা সুযোগ দিন।”
বিহারের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে বিজেপি বিরোধী মহাজোট গড়ে সাফল্য পেয়েছিলেন লালু-নীতীশ। পড়শি রাজ্যেও সেই জোটভাবনা সাফল্য এনে দেবে বলে আশা তাঁদের। বিজেপিকে রোখার লক্ষ্যে এ বার কংগ্রেসের হাতও ধরেছেন তাঁরা। কংগ্রেস যদিও এত দিন শিবুু সোরেন-এর ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোটে ছিল। বছর দেড়েকের সেই জোট সম্প্রতি ভেঙে গিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি অন্য দলগুলিকে কোণঠাসা করে রেখেছিল। কিন্তু, এ বারের নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের হিসেব ঝাড়খণ্ডের শাসনভার কার হাতে তুলে দেয় সে দিকে তাকিয়েই মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে পাঁচ দফার নির্বাচনের প্রথম ধাপ।
জম্মু-কাশ্মীরেও পাঁচ দফার নির্বাচন শুরু হবে মঙ্গলবার। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই নরেন্দ্র মোদীর পাখির চোখ ছিল এই রাজ্য। শপথ নেওয়ার পরই কার্গিল এবং লেহ্তে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণাও করেছিলেন। পাশাপাশি, প্রতিবেশী দেশের ছায়াযুদ্ধ যে আর বরদাস্ত করা হবে না, কার্গিলে সেই হুঁশিয়ারি দেন মোদী। উন্নয়নের মাধ্যমে উপত্যকাবাসীকে কাছে টেনে নেওয়ার বার্তা দিয়ে দিল্লি ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই প্রবল বন্যার কবলে পড়ে গোটা উপত্যকা। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘উদ্ধার’ এবং ‘ত্রাণ’-এর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। নিরাপত্তা বাহিনীকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে দুর্গত মানুষের মন জয় করে নেয় মোদী সরকার। বন্যা পরবর্তী সময়ে উপত্যকাবাসীর দুর্দিনে পাশে থাকার কৃতজ্ঞতা যে বিজেপি-র ভোটবাক্সেই জমা পড়বে সে বিষয়ে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব। তবে ময়দান ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন ভূমিপুত্র ওমর আবদুল্লাহ। উপত্যকাবাসীর র্দীঘ দিনের দাবিদাওয়া পূরণের আশ্বাসেই ভোটবাক্স ফের তাঁর প্রতি আস্থা রাখবে বলে ধারণা ন্যাশনাল কনফারেন্সের এই নেতার।
সব মিলিয়ে দুই রাজ্যের প্রেক্ষিত আলাদা হলেও একটি বিষয়ে মিল রয়েছে। যেন তেন প্রকারেণ বিজেপি-কে ঠেকানো। কিন্তু মোদী-অমিতের জোটের বিরুদ্ধে রাজ্যভিত্তিক সেই জোট কতটা কাজে আসে তা জানা যাবে ২৩ ডিসেম্বর।