আশার গল্পই শোনালেন দুই রাষ্ট্রনেতা
হোয়াইট হাউসের বাইরে একটি লোহার বেড়া। তার সামনে দু’জনেই গিয়ে দাঁড়িয়েছেন এক সময়ে। দু’জনের কেউই ভাবেননি এক সময়ে হোয়াইট হাউসেই দেখা হবে তাঁদের। দুই শক্তিশালী গণতন্ত্রের প্রধান হিসেবে।
হোয়াইট হাউসের বাইরে একটি লোহার বেড়া। তার সামনে দু’জনেই গিয়ে দাঁড়িয়েছেন এক সময়ে। দু’জনের কেউই ভাবেননি এক সময়ে হোয়াইট হাউসেই দেখা হবে তাঁদের। দুই শক্তিশালী গণতন্ত্রের প্রধান হিসেবে। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এ ভাবেই নিজেদের মনের কথা জানালেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই প্রথম রেডিওয় একসঙ্গে বসে কথা বললেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাই অনুষ্ঠান ঘিরে আগ্রহ ছিল যথেষ্টই। দুই রাষ্ট্রনেতাকে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকায় সেই আগ্রহ আরও বেড়েছিল। প্রথমে নিজেদের বক্তব্য বলার পরে নির্বাচিত প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন তাঁরা।
তেমনই দু’টি প্রশ্নের জবাবে মোদী ও ওবামা জানিয়েছেন, তাঁরা দু’জনেই এক সময়ে ওয়াশিংটনে বেড়াতে এসে হোয়াইট হাউসের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের বাইরে একটি লোহার বেড়ার ধারে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন মোদী। এখন সেই ছবি যথেষ্ট জনপ্রিয়। ওবামা জানিয়েছেন, ওই একই বেড়ার ধারে প্রথম বার দাঁড়িয়েছিলেন তিনিও। পরে অতিথি হয়ে যখন হোয়াইট হাউসে গিয়েছেন মোদী, তখন শিকাগোর বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতাগুলির সঙ্কলন তাঁকে উপহার দেন ওবামা। যে ধর্ম সম্মেলনে হিন্দুত্ব, ভারতীয়ত্বের বাণী শুনিয়েছিলেন বিবেকানন্দ। মোদীর জীবনের অনুপ্রেরণা বিবেকানন্দের বাণী-সহ ওই সঙ্কলন তাঁকে উপহার দিয়েছেন শিকাগোরই এক বাসিন্দা, বারাক ওবামা।
মোদী ও ওবামার কাহিনিতে মিলের কথা আগেও বলা হয়েছে বহু বার। কিন্তু সাধারণ পরিবার থেকে রাষ্ট্রের শীর্ষে পৌঁছে যাওয়াতেই যে সেই মিল থেমে নেই, তা আজ বোঝাতে চেয়েছেন দুই নেতা। তাঁদের মতে, এখনও হয়তো একই রকম সম্ভাবনা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে অনেক শিশু। কিন্তু তাদের অনেকেই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ওই শিশুদেরই জীবনে সুযোগ তৈরি করে দিতে চান তাঁরা।
নারী প্রগতির জন্য ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ অভিযানে জোর দিয়েছেন মোদী। একই উদ্দেশ্যে কাজ করছেন ওবামার স্ত্রী মিশেলও। মোদী কি এই অভিযানে ওবামার সাহায্য চেয়েছেন?
প্রধানমন্ত্রী জানাচ্ছেন, তিনি মনে করেন ওবামার জীবনই এই বিষয়ে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে। নিজের দুই মেয়েকে যে ভাবে বড় করছেন তিনি তা যথেষ্ট কৃতিত্বের। কন্যাসন্তানের প্রতি বৈষম্যের মানসিকতা বদলানোর উপরেও জোর দিয়েছেন মোদী।
ইচ্ছে থাকলেও এ বারে সেই দুই মেয়েকে ভারতে আনতে পারেননি ওবামা। জানাচ্ছেন, দুই মেয়েই ভারতীয় ঐতিহ্য, জীবন নিয়ে খুবই আগ্রহী। ওবামা পরিবারের সঙ্গে ভারতের যোগও আছে। তাই হয়তো মেয়েদের আগ্রহ আরও বেশি বলে মানছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পড়াশোনার জন্য মেয়েরা আসতে পারল না বলে আক্ষেপও আছে তাঁর। তিনি আর মিশেল মিলে মেয়েদের জন্য কিছু কেনাকাটাও করে নিয়ে যাচ্ছেন।
পরের বার মেয়েদের নিয়ে আসতে চান ওবামা দম্পতি। তখন হয়তো তিনি প্রেসিডেন্ট থাকবেন না। মোদী জানাচ্ছেন, তাতে কিছু যায় আসে না। তাঁরা ভারতে সব সময়েই স্বাগত।